Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

গবাদিপশুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা

গবাদিপশুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা
ড. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম
১৬ কোটি জনসংখ্যার এই দেশ পৃথিবীর মধ্যে জনসংখ্যার দিক থেকে প্রথম সারিতে অবস্থান করছে। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর সুষ্ঠু জীবন যাপনের জন্য এ দেশের প্রায় ২৪.৩  মিলিয়ন গরু, ১.৫ মিলিয়ন মহিষ, ২৬.৩ মিলিয়ন ছাগল ও ৩.৬ মিলিয়ন ভেড়া প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, কৃষি কাজ, হাল চাষ, চামড়া রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, গ্রামীণ পরিবহনে গাড়ি টানা, জ্বালানি ও মাটির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধির জন্য গোবর, ধর্মীয় সন্তুষ্টিতে পশু কোরবানি, কর্ম-সংস্থানসহ দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থ উপার্জন এবং পরিবেশ রক্ষাসহ ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। গবাদিপশু আর অবহেলিত সম্পদ নয় বরং এটি  কৃষকের নিকট একটি অতি মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গবাদিপশুর গুরুত্ব অনুধাবন করেই এদেশের গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ৭৫ ভাগের বেশি লোক কোনো না কোনো পশু-পাখি পালন করে থাকেন। তবে গবাদিপশু প্রতিপালনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রধান সমস্যা হচ্ছে রোগ। গবাদিপ্রাণির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বলতে গবাদিপ্রাণির রোগ প্রতিরোধ ও অসুস্থ পশুকে চিকিৎসা প্রদান করাকে বোঝায়।
গবাদিপশুকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে মুক্ত রাখতে হলে বেশ কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখা প্রয়োজন তার মধ্যে রয়েছে -
স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান :  গবাদিপশুকে বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থা যেমন- ঝড়, বৃষ্টি, অতিরিক্ত ঠা-া ও গরম এবং পোকামাকড়, বন্য জীবজন্তু হতে রক্ষার জন্য যথোপযুক্ত বাসস্থান জরুরি। বাসস্থান নির্ভর করে আপনি কতটি গবাদিপশু লালন পালন করছেন তার উপর। যদি সংখ্যা ১০-১৫টির মধ্যে থাকে, তবে স্ট্রাকচারড শেড বানানোর দরকার নেই। সাধারণত আমরা গোয়ালঘরে যেভাবে গরু পালন করি সেই রকম একটা গোয়ালঘরের মতো ঘর বানাতে পারলেই পালন শুরু করা যায়। তবে এখানে বিচার্য বিষয় হচ্ছে যে গবাদিপশুর আরামের জন্য পর্যাপ্ত জায়গার সংস্থান যেমন- প্রতিটি গরুর জন্য ৩ ফিট প্রস্থ এবং ৭ ফিট দৈর্ঘ্যের জায়গা দরকার হয়। ঘরে প্রচুর আলো বাতাস চলাচলের জন্য ঘরটি উত্তর-দক্ষিণমুখী হওয়া বাঞ্ছনীয়। এর সাথে যা দরকার হয় তা হচ্ছে খাবারের পাত্র/চারি। ঘরটি খর, টিন, ছন অথবা হোগলাপাতা দিয়ে তৈরি করা যায়। কোন অবস্থাতেই ঘর যেন স্যাঁতস্যেঁতে অবস্থায় না থাকে। বাসস্থান প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার করলে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।
খাদ্য ব্যবস্থাপনা : সুষম খাদ্য শরীরে শক্তি ও কাজ করার ক্ষমতা দেয়; শরীরের বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ করে; শরীরকে রোগমুক্ত রাখাতে সাহায্য করে। গবাদিপশুর খাদ্য প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত ১. ছোবড়া বা আঁশজাতীয় খাদ্য। ২. দানাদার খাদ্য ৩. পানি।
ছোবড়া বা আঁশওয়ালা খাদ্য গবাদিপশুর প্রধান খাবার এবং পুষ্টির প্রধান উৎস। গবাদিপশুকে তার ওজনের কমপক্ষে ৪% বিভিন্ন জাতের ঘাস দিতে হবে। পুষ্টিমান কম হলেও পেট ভরাতে ও জাবর কেটে হজমে সহায়তার জন্য গবাদিপশুকে পর্যাপ্ত খড় খাওয়ানো প্রয়োজন।
যেসব খাদ্যে আয়তনের তুলনায় খাদ্যমান অপেক্ষাকৃত বেশি এবং সহজপাচ্য তাকে দানাদার খাদ্য বলা হয়। দানাদার গোখাদ্যগুলো হলো চালের কুঁড়া, গমের ভুসি, ভুট্টা, বিভিন্ন প্রকার খৈল, কলাই, ছোলা, খেসারি, সয়াবিন ও শুকনো মাছের গুঁড়া এসব। সুষম দানাদারের মধ্যে কমপক্ষে ৫৫-৬০% শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট (চালের কুড়া, ভুট্টা, গমের ভুসি), ২৫-৩০% প্রোটিন বা আমিষ (ডালবীজ যেমন : এংকর, মসুরি, মুগ, খেসারি, মাষকলাই বা ডালবীজের খোসা), ১০-১২% ফ্যাট (তেলজাতীয় বীজের খৈল, যেমন: সরিষা, তিল, নারিকেল, সয়াবিন, কালোজিরার খৈল), ভিটামিন ও মিনারেল ২-৩% (যেমন : লবণ ও ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স) থাকবে।
গবাদিপশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খাওয়াতে হবে। বাচ্চাকে তিন মাস তার ওজনের কমপক্ষে ১০% মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে।
পরজীবী দমন ব্যবস্থাপনা : গবাদিপশু সাধারণত তিন ধরনের কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয় যেমন- গোল কৃমি, ফিতা কৃমি ও পাতা কৃমি (কলিজা কৃমি)। গবাদিপশুকে বছরে কমপক্ষে তিনবার কৃমির ঔষধ খাওয়ানো উচিত। তাছাড়া বহিঃপরজীবীর (যেমন- উকুন, আঠালি ও মাইট) আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
টিকা প্রদান : উল্লিখিত ব্যবস্থাগুলো সুষ্ঠুভাবে সুসম্পন্ন করার পাশাপাশি যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে প্রতিপালিত পশুকে নিয়মিত ভ্যাকসিন বা টিকাদানের আওতায় নিয়ে আসা।
গবাদিপশুর বিভিন্ন রোগের মধ্যে কয়েকটি রোগ সংক্রামক বা ছোঁয়াচে। এ সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগগুলোতে গবাদিপশু আক্রান্ত হলে অনেকক্ষেত্রে চিকিৎসার কোনো সুযোগ বা সময় পাওয়া যায় না। চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়ার আগেই পশু মারা যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে অনেক অর্থ ব্যয় করে দ্রুত চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়ে গবাদিপশুকে বাঁচিয়ে রাখা হলেও তা থেকে প্রত্যাশিত উৎপাদন পাওয়া যায় না। কাজেই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা হচ্ছে এই রোগগুলো যেন গবাদিপশুকে আক্রমণ করতে না পারে, তার জন্য এসব সংক্রামক রোগসমূহ প্রতিরোধকল্পে ভ্যাকসিন বা টিকা প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া। বাংলাদেশের গবাদিপশুর ক্ষেত্রে ৮টি সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যায় এবং এই রোগগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টিকাও  প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর উৎপাদন করে। এ দেশেপ্রাপ্ত গবাদিপশুর জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ভ্যাকসিন টিকার নাম ও ব্যবহার বিধি টেবিলে দ্রষ্টব্য।
স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণ, পরিমাণমতো সুষম খাবার সরবরাহকরণ এবং নিয়মিত পরজীবী দমন ও টিকা প্রদান সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান গবাদিপশুর পূর্বশর্ত। এসব ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলেই প্রাণিজ আমিষের কাক্সিক্ষত চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে।

লেখক : অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, সিলেট, মোবাইল : ০১৭১১৪৮৪৯৪৫, ই-মেইল :s.islam7525gmail.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon